যে ৫ কারণে দর্শকের আগ্রহে ‘মহানগর ২’
প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ
গতকাল রাত ১২টার পর ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে মুক্তি পেয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত ওয়েব সিরিজ ‘মহানগর ২’। মুক্তির পরই শুরু হয়েছে নতুন হিসাব। প্রথম কিস্তির তুলনায় দ্বিতীয়টিতে ‘ওসি হারুন’ চরিত্রে কতটা উতরাতে পারলেন মোশাররফ করিম? এবারের সিজনে কী কী চমক রয়েছে—এমন নানা প্রশ্ন ঘুরছে দর্শকের মধ্যে। মুক্তির পর সিরিজটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা। কিন্তু কেন ‘মহানগর ২’ দেখবেন? জেনে নেওয়া যাক সিরিজটি দেখার সম্ভাব্য পাঁচটি কারণ।
প্রথমত, ‘মহানগর-২’-এর গল্প এবারও নানা চমক ছিল। গল্পের উপস্থাপনাও ছিল ভালো। এ জন্য সবার আগে বলতে হবে সিরিজটির পরিচালক আশফাক নিপুণের দক্ষতার কথা। ভালো একটি গল্প টানটান উত্তেজনার মধ্যে দর্শকদের সামনে এনেছেন। গল্পের শুরুটা ‘মহানগর’ সিরিজের পর থেকে। এবারের পর্বে শুরুতেই দেখা যায়, একটি কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকে রাখা হয়েছে ওসি হারুন চরিত্রের অভিনেতা মোশাররফ করিমকে। অপরাধের দায়ে পুলিশের এক কর্মকর্তাকে আটকে রাখার ঘটনা, জিজ্ঞাসাবাদ সেখান থেকে নতুন গল্পগুলো ডালপালা ছড়াতে সহায়তা করেছে।
জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে ওসি হারুনের চরিত্রের ফ্ল্যাশব্যাক। সেখানে তাঁর ২০ বছরের ক্যারিয়ার ঘুরেফিরে এসেছে। একটি অতীত ঘটনা এমন, ওসি হারুন থানা থেকে বিদায় নেবেন। তাঁকে একজন কাউন্সিলর ফুলেল শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন। মোশাররফ করিমের সংলাপ, ‘শুধু ফুল পাঠায়ছে? আর কিছু পাঠায় নাই।’ উত্তর আসে ‘না’। তখন হারুন বলতে থাকেন, ‘আপনার চোখ দেখে পরিষ্কার বলে দিতে পারি কাউন্সিলর আবদুল মান্নান শুধু ফুলই পাঠায় নাই, সঙ্গে কিছু টাকাও পাঠায়ছে। আপনি ফুলটা আমার হাতে দিয়ে টাকাটা আপনার হাতে রেখেছেন। এসব চান্দার টাকা। নিজের টাকা দিয়ে আবদুল মান্নান আমাকে বিদায় দেওয়ার মতো মানুষ না।’
‘মহানগর-২’–তে আফসানা মিমি
ভিডিও থেকে নেওয়া
এমন অনেক ঘটনা গল্পের চরিত্রকে আরও বেশি মজবুত করেছে। বিশেষ করে উল্লেখ করা যায়, মোশাররফ করিমের বিপরীতমুখী চরিত্রকে। ঈদে মোশাররফ করিমের কাজ নিয়ে আলোচনা বেশি হয় সেটা নতুন কিছু নয়। তবে এবার নতুন করে ‘মহানগর ২’ দিয়ে আলোচনায় থাকবেন এই অভিনেতা। এবারই প্রথম ঈদে তাঁর ওয়েব সিরিজ মুক্তি পেল।
দুই, অভিনয়শিল্পীদের বাজিমাত। পরীক্ষিত এই অভিনেতার অভিনয় নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। গত রাতে সিরিজটি মুক্তির পরই আবার আলোচনায় মোশাররফ করিম। ফেসবুক–ভক্তরা তাঁকে ঘিরে শত শত রিভিউ দিচ্ছেন। বেশির ভাগ ভক্তই মোশাররফকে ১০–এ ১০ দিতে চান। কারণ, তাঁর অভিব্যক্তি, চাহনি, কথা বলার ধরন নাকি ভক্তদের চোখ সরানোর সুযোগ দেয়নি। কেউ কেউ বলছেন, মোশাররফ করিম অভিনীত ‘মহানগর’ দেশের অন্যতম ওয়েব সিরিজের তালিকায় জায়গা করে নিচ্ছে।
‘মহানগর-২’–তে ফজলুর রহমান বাবু
ভিডিও থেকে নেওয়া
একটি দৃশ্যের কথা বলা যাক, মোশাররফ করিমের সামনে বসে আছেন ফজলুর রহমান বাবু ও রফিউল কাদের। তাঁরা ওসি হারুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তাঁরা জানান, ২০ বছরের ক্যারিয়ারে হারুন যে অপরাধ করেছেন, তাঁর সবই তাঁদের কাছে রয়েছে। অভিযোগ শুনেই মুচকি হাসেন মোশাররফ করিম।
তারপর মোশাররফ করিম বলতে যান, ‘শোনেন, দুইটা কথা মনে রাখবেন।’ তখন ধমক দিয়ে তাঁকে থামিয়ে দেন ফজলুর রহমান বাবু। কিন্তু পরক্ষণেই মোশাররফ বুঝিয়ে দেন তিনিও থেমে থাকার পাত্র নন। বিপরীতমুখী এই দুই কর্মকর্তার অভিনয় এবার জমে উঠেছে। পুরো গল্পেই অভিনয় ও সংলাপ দর্শকদের টানবে।
তিন, সিরিজটিতে সমসাময়িক নানা ঘটনার ছাপ পাওয়া গেছে। যা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। পরিচালকের রাজনৈতিক সচেতনতাও প্রশংসিত হচ্ছে। ‘মহানগর ২’ দেখতে বসলে দেশে সম্প্রতি সময়ে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার কথাই আপনার মনে পড়বে।
‘মহানগর ২’ দেখার চতুর্থ কারণ হিসেবে বলতে হবে সিরিজের নতুন যুক্ত হওয়া চরিত্রগুলোর কথা। বিশেষ করে গত সিজনের আলোচিত চরিত্র মলয় বাদ পড়ার পর অনেক দর্শই শঙ্কায় ছিলেন—না জানি দ্বিতীয় সিজন কেমন হয়! তবে দ্বিতীয় সিজনে নতুন আসা চরিত্রগুলো দর্শকদের যেন আরও চমকে দিয়েছেন। সিরিজে আফসানা মিমিকে দেখা যাবে নেত্রীর ভূমিকায়। তিনি নির্বাচন করবেন। হঠাৎ তাঁর জনসভায় বোমা হামলা হয়। এ ছাড়া ফজলুর রহমান বাবু, বৃন্দাবন দাস, তানজিকা আমিন, দিব্য জ্যোতির অভিনয় প্রশংসা পেয়েছে।
পঞ্চম কারণ হিসেবে অবশ্যই বলতে হবে শেষ দৃশ্যের চমকের কথা। সেই অংশের গল্পটা দর্শক দেখে নেবেন। তবে একটা চমকের কথা বলে দেওয়াই যায়, সেটা হলো পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের উপস্থিতি। ‘মহানগর ২’-এ অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এই প্রথম ঢাকা ও কলকাতার দুই জনপ্রিয় অভিনেতাকে একসঙ্গে দেখেছে দর্শকেরা।
‘মহানগর ২’ শেষ করলে বুঝতে পারবেন শেষ থেকে এখান তৃতীয় কিস্তি আসতে পারে। সেই সিজন যদি আসে আর সেখানে মোশাররফ করিম ও অনির্বাণকে একসঙ্গে দেখা যায়, তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
‘মহানগর-২’–তে অনির্বাণ ভট্টাচার্য
ভিডিও থেকে নেওয়া
‘মহানগর ২’ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা হলেও সিরিজটির কিছু দুর্বলতার কথাও বলতে হয়। সিরিজটির গল্পের গতি একটু মন্থর। চাইলে হয়তো স্থিতি কমানো যেত। এ ছাড়া বেশির ভাগই গল্পই সংলাপের মাধ্যমে টানা হয়েছে। বলা যায়, অনেকটাই সংলাপনির্ভর হয়েছে গেছে। কিছু দৃশ্য ছিল দীর্ঘ সময় ধরে। অনেক সমালোচক এমন মন্তব্যও করেছেন, সিরিজটিতে ‘ভিজ্যুয়াল স্টোরি টেলিং’-এ জোর দেওয়া হয়নি।
তবে অভিনয়, এ সময়ের নানা ঘটনার প্রতিফলন, দারুণ পরিচালনার কারণে বাংলাদেশি দর্শকের কাছে ভালো লাগার মতো সিরিজ ‘মহানগর ২’। মোশাররফ করিম যে অনবদ্য সেটা আবার প্রমাণ করলেন।
- ইলিয়াস কাঞ্চনের অর্জনে আমি বেশি খুশি: ডলি জহুর
- রাজের ৩ সিনেমার পোস্টার দেখে কী যে আনন্দ হয়েছিল: পরীমনি
- ১২ গান নিয়ে নওশীন মনযূর-এ-খুদা
- ৪০০ কোটি টাকায় বাড়ি বিক্রি করলেন ব্র্যাড পিট
- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে চিত্রনায়িকা মাহিয়া ও তাঁর স্বামীর নামে পুল
- বাংলা একাডেমির সাম্মানিক ফেলোশিপ পাচ্ছেন তানভীর মোকাম্মেল
- দীর্ঘ ট্রাফিক জ্যাম, সঙ্গে গরম—মেট্রো ধরলেন হৃতিক
- যে ৫ কারণে দর্শকের আগ্রহে ‘মহানগর ২’
- মিস ইন্ডিয়ার মুকুট নন্দিনী গুপ্তর মাথায়
- বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ালেন সিয়াম