ঢাকা, ২০২৪-০৫-২০ | ৬ জ্যৈষ্ঠ,  ১৪৩১

বাংলাদেশের আইসিটি খাতে জাপানিদের বিনিয়োগের আহ্বান পলকের

প্রবাস নিউজ ডেস্কঃ

প্রকাশিত: ০১:৫৯, ১০ মে ২০২৪  

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, স্বাধীনতা থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত জাপান বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী। হাইওয়ে কমিউনিকেশন, মেট্রোরেল, থার্ড টার্মিনাল, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরসহ বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টে জাপান সফলতার সঙ্গে কাজ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘমেয়াদি ভিশন নিয়ে পোস্ট, টেলিকম এবং আইসিটি খাতে বিনিয়োগ করতে জাপানি বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসতে পারে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে জাপানি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে ‘আইটি বিজনেস সামিট’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের লঞ্চপ্যাডের ওপর ভিত্তি করে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার তার নতুন রূপকল্প ঘোষণা করেছেন। স্মার্ট সিটিজেন হলো স্মার্ট বাংলাদেশের ৪টি স্তম্ভের মধ্যে প্রথম এবং প্রধান স্তম্ভ, যার অর্থ স্মার্ট সিটিজেন হবে সৃজনশীল, উদ্ভাবনী এবং সমস্যা সমাধানকারী। বাংলাদেশি তরুণ মেধাবী প্রকৌশলীরা জাপানে ইএমআই ল্যাবের মতো আইওটি এবং রোবোটিকসভিত্তিক সমাধান নিয়ে কাজ করছেন।

অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে এমন উদ্ভাবনী সমস্যা সমাধানকারীর প্রয়োজন হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯-এর সময় আমরা কৃষি কর্মশক্তির ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছি। তাই আমাদের অবশ্যই আইওটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং রোবোটিকসের মতো সীমান্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ক্ষেত্রের যান্ত্রিকীকরণ করতে হবে।’

পলক বলেন, ‘প্রযুক্তি, বিশেষ করে আইসিটি, একটি আন্তঃসীমান্ত সমস্যা, এর কোনো ভূমি সীমানা নেই। আমাদের প্রায় ৭ লাখ আইটি ফ্রিল্যান্সার বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করছে। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের বহুজাতিক কোম্পানির সাথে আউটসোর্সিং করছে। আমরা আইসিটি সেক্টরে একটি স্টার্ট-আপ এবং উদ্যোক্তা বিপ্লব প্রত্যক্ষ করেছি। উদ্যোক্তা এবং ফ্রিল্যান্সাররা শুধু নিজেদের জন্য অর্থ উপার্জন করে না, আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখে। এভাবেই আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের গতিশীল দিকনির্দেশনায় আমাদের অর্থনীতিকে শ্রমভিত্তিক থেকে প্রযুক্তিভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করেছি এবং এখন আমরা জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘একটি কথা আছে যে ’প্রতিটি সংকটের মাঝেই রয়েছে মহান সুযোগ’ এবং আমরা এটি কোভিডের সময় অনুভব করেছি। আমাদের অভ্যন্তরীণ সফটওয়্যার বিকাশকারীরা টিকা নিবন্ধন এবং পরিচালনা ব্যবস্থার জন্য 'সুরক্ষা' অ্যাপটি তৈরি করেছে এবং আমরা এই অ্যাপটি ব্যবহার করে ১২০ মিলিয়ন ব্যবহারকারীকে নির্বিঘ্নে টিকাদান পরিষেবা দিয়েছি। এটা আমাদের মেধাবী তরুণদের গুণগতমান ও সক্ষমতা প্রকাশ পায়। এভাবেই আমরা নাগরিকের নখদর্পণে সব সরকারি সেবা দিতে চাই। জাপানি বিনিয়োগকারীদের, সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর জন্য প্রযুক্তি, বিটুবি, বিটুজি, এবং জিটুজি সহযোগিতার জন্য বিপুল সম্ভাবনাময় সুযোগ রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইলেকট্রনিকস, ডিজিটাল ডিভাইস ম্যানুফ্যাকচারিং, অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট, সফটওয়্যার, আইসিটি শিল্প এবং স্টার্টআপে জাপানি কোম্পানিগুলোর আগ্রহ আমি দেখেছি। বর্তমানে বাংলাদেশে ২ হাজার ৫০০ টি স্টার্ট-আপ রয়েছে এবং তাদের মধ্যে ২০০ টি স্টার্ট-আপ জাপান, সিঙ্গাপুর, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ২ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে। এটি দেখায় যে বাংলাদেশি স্টার্ট-আপগুলো বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি এবং বিশ্বাস অর্জন করেছে। এসব সাফল্যের পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বাজার মাপ যোগ্যতা, পলিসি,  সরকারি সহায়তা এবং লজিস্টিক সকল ক্ষেত্রে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে।’

জাপান বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু উল্লেখ করে পলক বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের যোগাযোগ ও অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নে সহযোগিতা করেছে জাপান। বেসরকারি খাত এবং জাপান সরকারের সহযোগিতায় স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প অর্জনের মাধ্যমে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে চাই।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, বাংলাদেশ স্টার্ট-আপ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ, বেসিসের সভাপতি মি. রাসেল টি আহমেদ প্রমুখ।

সর্বশেষ
জনপ্রিয়