ঢাকা, ২০২৪-০৫-০৮ | ২৫ বৈশাখ,  ১৪৩১

আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে বিশিষ্টজনের অভিমত

সহিংসতা এবং অপপ্রচার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতিবন্ধক

প্রবাস নিউজ ডেস্ক :

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ৭ নভেম্বর ২০২৩  

বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সহিংসতা এবং অপপ্রচার দুটি প্রধান বাধা বলে এক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে বিশিষ্টজনেরা মত দিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 
৬ নভেম্বর সোমবারে কাউন্সিলম্যান, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট লেখক ড. নুরুন নবীর সভাপতিত্বে “সহিংসতা ও ভুল তথ্য: বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতা” শীর্ষক ওয়েবিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। ওয়েবিনারে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে সংযুক্ত পাঁচজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্যানেলিস্ট হলেন: অধ্যাপক এবিএম নাসির, অধ্যাপক আবদুর চৌধুরী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন, সেথ ওল্ডমিক্সন এবং ড. মাজহারুল ইসলাম রানা। 
বাংলাদেশের অগ্রগতি, বিশেষ করে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলি টানেল এবং মেট্রো রেলের মতো বড় অবকাঠামোগত (মেগাপ্রজেক্ট)  উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বক্তারা ১৫ বছর ধরে একটি সরকারের ধারাবাহিকতার কৃতিত্ব দেন। লাখ লাখ বাংলাদেশিকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপবৃত্তিসহ সামাজিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথাও বক্তারা উল্লেখ করেন। জামায়াত-বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল নৈরাজ্য ও সহিংসতা সৃষ্টি না করলে বাংলাদেশ আরও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যেতে  পারতো বলেও দাবি করেন তারা। উদাহরণ হিসেবে বক্তারা বলেন, বিএনপি জামাত ঢাকায় সরকার বিরোধী সমাবেশ করেছে, সহিংসতা করেছে এবং একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে, হাসপাতালের বেশ কয়েকটি বাস ও অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দিয়েছে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালিয়েছে এবং অনেক সাংবাদিককে আহত করেছে। এই সহিংসতা সেই দিনেই করা হলো যেদিন প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পানির নিচের সড়ক টানেল বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করেন। 
বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য বিরোধী দলগুলোর দাবি উল্লেখ করে বক্তারা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এই দলগুলোর দাবি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। বক্তারা সংবিধানের কথা উল্লেখ করে বলেন নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই নির্বাচন হতে হবে। 
অধ্যাপক আবদুর চৌধুরী বলেন গোল্ডম্যান স্যাক্স বাংলাদেশকে বিশ্বের পরবর্তী শীর্ষ দশটি প্রতিশ্রুতিশীল অর্থনীতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তিনি বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, উদাহরণস্বরূপ, ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ। তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পক্ষে কথা বলেন। 
ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) একটি সাম্প্রতিক জরিপ উদ্ধৃত করে বলেন অর্থনৈতিক বর্তমান সমস্যা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার ৭০% জনপ্রিয়তার রেটিং রয়েছে। ব্ল্যাকবার্ন আরও উল্লেখ করেন জামাত বিএনপির নেতৃত্বাধীন একচেটিয়া ভুল তথ্য অনলাইনে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি বাস্তব প্রভাব ফেলেছে, তাই ইউরোপীয় এবং আমেরিকান উভয় অংশীদারদের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এগিয়ে আসা উচিত। তিনি বলেন ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশের ক্রমাগত সমর্থনের কারণে ফ্রান্স বাংলাদেশে তৃতীয় ধাপে উন্নয়নে সমর্থন করবে বলেও সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেন।
ড. রানা বাংলাদেশে ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তির প্রভাব এবং এটি কীভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে কথা বলেন। চাঁদে জামায়াত নেতার চেহারার ঘটনা উল্লেখ করে রানা বলেন, জামায়াত-বিএনপি জনগণকে কারসাজি করতে এবং ইসলামের নামে সহিংসতা উসকে দেওয়ার জন্য যে কোনো সম্ভাব্য নোংরা কাজ করতে পারে। 
অধ্যাপক নাসির আমেরিকান নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা ইসলামি জঙ্গিবাদের উত্থানকে প্রতিহত করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া না করেন এবং বাংলাদেশকে প্রগতিশীল গণতন্ত্রের উদাহরণ ও মধ্যপন্থী মুসলিম দেশের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার চাকাকে সমর্থন করেন। 
সেথ ওল্ডম্যাক্সন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে সতর্ক করে বলেন সহিংস চরমপন্থীরা সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভুল তথ্যের মাধ্যমে লোক নিয়োগ করেন এবং বাংলাদেশে সহিংসতা উসকে দিতে তারা বেশ সক্রিয়। তাদের ভুল তথ্য প্রচারণার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য, তিনি আন্তর্জাতিক রিপাবলিকান ইনস্টিটিউশন দ্বারা উল্লিখিত সরকার প্রধানের ৭০% জনপ্রিয়তার রেটিং-এর মতো ইতিবাচক তথ্য নিয়ে একটি প্রচারণা শুরু করার পরামর্শ দেন।

আরও পড়ুন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়